নক্ষত্রলোকের দেবতাত্মা- নারায়ন সান্যাল

2001: A Space Odyssey-র ছায়াবলম্বনে রচনা নারায়ন সান্যালের নক্ষত্রলোকের দেবতাত্মা। Cultural Difference এর সঠিক বাংলা প্রতিশব্দ আমার আয়ত্তাধীন নয়, তবে এছাড়া আর কোন ব্যাখ্যা হয় না দু'খানা বইয়ের দু'রকম treatment এর। 
নারায়ন সান্যাল বিশ্বাসঘাতক বইতে দেখিয়েছিলেন যে সোজা সাধারন পাঠকের বোধগম্য ভাষায় বিজ্ঞান বিশ্লেষণের ক্ষমতা তাঁর কতখানি আয়ত্ত।.সেই ধারার হাত ধরেই তাঁর দ্বিতীয় প্রয়াস এই বই। কি অসম্ভব সরল ভাবে আপেক্ষিকতাবাদের মত জটিল বিষয় কে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি সেটা না পড়লে বোঝা সম্ভব না।
কিন্তু এ রচনার মূল প্রতিপাদ্য তাঁর লেখার ভঙ্গি বিশ্লেষণ করা না- আমার মত অর্বাচীনের সে কাজ সাজেও না।
আর্থার ক্লার্ক এর লেখা বইটিও আমার পড়া আর সেটা মূল ইংরেজিতেই। দুই বইয়ের দৃষ্টিভঙ্গির তফাৎ শুধু তাদের রচনাশৈলীতে না। তাদের রচয়িতাদের Cultural Difference একটা বড় ভূমিকা নিয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে অদৃশ্য পুতুল সঞ্চালকের মত।
  • নারায়ন সান্যাল (১৯২৪-২০০৫)- স্থাপত্যবিদ এবং ভারতীয়।
  • আর্থার ক্লার্ক (১৯১৭-২০০৮)- পদার্থবিদ, গাণিতিক এবং ব্রিটিশ।

দুজনের জীবনকাল দেগে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য শুধু এটুকু দেখিয়ে দেওয়া যে তাঁরা কম-বেশি একই সমকালের বাসিন্দা। কাজেই কালের তফাতে তাঁদের ভাবনার তফাৎ- এই চিন্তা মনে হয় অমূলক। তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করবার কারন এইটুকু বুঝিয়ে দেওয়া যে ভিন্ন শাখার হলেও দুজনেই বিজ্ঞানের উপাসক। কাজেই সেখানেও তাঁদের মানসিকতার তফাৎ খুব বেশি নয় বলেই মনে হয়।
সমীকরণের এক মাত্র factor পড়ে থাকল তাঁদের nationality। 
ক্লার্কের HAL ৯০০০ অনেক বেশি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, অনেক বেশি জটিল এবং উন্নত মস্তিষ্কশালী। Basically সে সাধারণ Computer এর থেকে অনেক বেশি উন্নত, HAL was an Artificial Intelligence.
নারায়ন সান্যালের যন্ত্র-মা শুধুই মাত্র এক যান্ত্রিক মস্তিস্ক। তার চরিত্র চিত্রণে নারায়ন বাবু এইটুকু বুঝিয়ে দিয়েছেন যে সে Turing Test পাস করে যাবে, কিন্তু তা ছাড়া তার কোন ভূমিকা নেই একমাত্র Crucial tipping point টুকু provide করা ছাড়া। 
HAL এর moral conundrum টা ভাবতে বাধ্য করে। তার কাছে সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সত্য গোপন করা, ক্রমাগত মিথ্যে কথা বলে যাওয়া। Which led to the paranoia. Paranoia? In a machine? Surely you're joking? আমাদের কাছে- Human Psychology তে ব্যাপারটা ধরতে পারা খুব কঠিন। একটা machine- তার কাছে আবার সত্যি আর মিথ্যে কি? তার কাছে ক্রমাগত মিথ্যে বলে যাওয়াটা আবার কি রকম মানসিক সমস্যা? একটা যন্ত্রের আবার মন কি?
অথচ সেই তুলনায় যন্ত্র-মা সোজা সরল- Basically ভীষণ flat. তার কোন shades নেই।

ক্লার্কের David Bowman যেখানে বৈজ্ঞানিক, নারায়ন সান্যালের মৈত্রেয়ী অনুসন্ধিৎসু- সর্ব অর্থেই।
Bowman "তাঁদের" ব্রহ্মাণ্ডে পৌঁছে তাঁদের সামনাসামনি দেখতে না পেলেও তাঁদের দেখতে পায়, মৈত্রেয়ী পায় না কারন তাঁরা কায়াহীন।
এই খান থেকেই আমার মূল প্রশ্নের শুরু। নারায়ন সান্যাল এই concept বোঝেননি এটা আমার কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়। তবে কি তিনি tone down করেছিলেন বাঙালি পাঠকদের কথা ভেবে? ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এবং মানসিক দোলাচলে ভোগ যন্ত্র বাঙালি পাঠক হজম করে উঠতে পারবে কি না, এমন কোন দোলাচল ছিল তাঁর মাথার মধ্যে? আর কল্পবিজ্ঞানের গল্পকে উপনিষদের ছোঁয়া দিয়ে একটু আধিদৈবিক ঘেঁষা করে তুলে কি তিনি চেয়েছিলেন যে যদি একটু এই সুরুসুরি দিয়ে বিজ্ঞানের কিছুটাও যদি খাওয়ানো যায় সাধারণ মানুষকে?
কারন একই সময়কালে দাঁড়িয়ে আর্থার ক্লার্কের কোন সমস্যা হয়নি সরাসরি এই প্রশ্নগুলো তুলে দিতে। সেখানে আধ্যাত্মিকতার কোন লেশমাত্র নেই।
এই তফাৎ কি শুধু মাত্র দেশ ভিত্তিক?

Comments

Popular posts from this blog

The Hell

Speaking of Last year....

Harry Potter and The Philosopher's Stone- J K Rowling